ফিলিং চিকিৎসা কি?

ফিলিং চিকিৎসা হল একটি আধুনিক ডেন্টাল পদ্ধতি যা দাঁতের ক্ষয়রোগ (ক্যাভিটি) মেরামত করতে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়ায় দাঁতের ক্ষয়গ্রস্ত অংশ পরিষ্কার করে, তার জায়গায় বিশেষ পদার্থ দিয়ে পূরণ করা হয় যা দাঁতের প্রাকৃতিক রঙের সাথে মিশে যায় এবং দাঁতের কাঠামোকে শক্তিশালী করে।

এই চিকিৎসা সাধারণত দাঁতে ছোট বা মাঝারি গর্ত, ক্ষয়রোগ, ভাঙা দাঁত মেরামত এবং দাঁতের আকার ও রঙ সামঞ্জস্য করতে করা হয়। কম্পোজিট ফিলিং দাঁতের রঙের সাথে মিশে যায়, দ্রুত ও সহজ প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।

ফিলিং চিকিৎসা
দাঁতের গর্তের ফিলিং চিকিৎসার খরচ: ৯৯০৳

চিকিৎসা প্রক্রিয়া

ফিলিং চিকিৎসা সাধারণত মাত্র একটি ভিজিটে সম্পন্ন হয়। নিচে ধাপগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হল:

  1. প্রথম ধাপ

    দাঁত পরীক্ষা করে ক্ষয়গ্রস্ত অংশ চিহ্নিতকরণ, লোকাল অ্যানেসথেশিয়া প্রয়োগ (প্রয়োজন হলে)

  2. দ্বিতীয় ধাপ

    ক্ষয়গ্রস্ত অংশ সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা এবং জীবাণুমুক্ত করা

  3. তৃতীয় ধাপ

    বিশেষ পদার্থ (কম্পোজিট রেসিন) দিয়ে গর্ত পূরণ করা এবং UV লাইটের সাহায্যে শক্ত করা

  4. চতুর্থ ধাপ

    দাঁতের প্রাকৃতিক আকৃতি দেওয়া এবং পলিশ করার মাধ্যমে চিকিৎসা সম্পন্ন করা

সুবিধা ও অসুবিধা

ফিলিং চিকিৎসার সুবিধা

  • দাঁতের প্রাকৃতিক রঙের সাথে মিশে যায়
  • দ্রুত ও সহজ প্রক্রিয়া (মাত্র ২০-৩০ মিনিট)
  • দাঁতের কাঠামোকে শক্তিশালী করে
  • আরও ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে
  • চিবানোর ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে
  • নিয়মিত যত্ন নিলে দীর্ঘস্থায়ী হয়

ফিলিং চিকিৎসার অসুবিধা

  • বড় গর্তের জন্য উপযুক্ত নয়
  • অনেক বছর পর প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে
  • চিকিৎসা পর কিছু সময় সংবেদনশীলতা থাকতে পারে
  • ধূমপায়ীদের দাঁতে দাগ পড়তে পারে
  • অতিরিক্ত কড়া খাবার চিবালে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা

ফিলিং vs রুট ক্যানেল

ফিলিং দাঁতের ক্ষয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়, রুট ক্যানেল শেষ পর্যায়ে করা হয়। ফিলিং দ্রুত ও সহজ, রুট ক্যানেল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তাই গর্ত দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিলিং করে ফেলা উত্তম এতে পরবর্তিতে রুট ক্যানেল প্রয়োজন হয় না।

মোটকথা: ফিলিং দাঁতের ক্ষয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়, রুট ক্যানেল শেষ পর্যায়ে করা হয় করা হয়। ফিলিং দ্রুত ও সহজ, রুট ক্যানেল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তাই গর্ত দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফিলিং করে ফেলা উত্তম এতে পরবর্তিতে রুট ক্যানেল প্রয়োজন হয় না।

ফিলিং বিষয়ক কিছু সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর:
কখন ফিলিং প্রয়োজন হয়?
দাঁতের ক্ষয় (ক্যাভিটি) পূরণ করতে, ভাঙা দাঁত মেরামত করতে, দাঁতের আকার ও রঙ সামঞ্জস্য করতে।
ফিলিংয়ের ধরণ কি কি?
ফিলিং বিভিন্ন ধরনের হয়: কম্পোজিট রেসিন (দাঁতের রঙের), অ্যামালগাম (সিলভার), গ্লাস আইনোমার, এবং গোল্ড ফিলিং। কসমেটিক ফিলিং হিসেবে কম্পোজিট রেসিন সবচেয়ে জনপ্রিয়।
কোন ধরণের ফিলিং সবচেয়ে ভালো?
কম্পোজিট রেসিন ফিলিং সবচেয়ে ভালো কারণ এটি দাঁতের রঙের সাথে মিশে যায়, দেখতে প্রাকৃতিক লাগে এবং দাঁতের সাথে শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করে।
ফিলিং করার পর কি কি করতে হবে?
চিকিৎসার পর কিছুক্ষণ সংবেদনশীলতা অনুভূত হতে পারে। ঠান্ডা ও গরম খাবার/পানীয় এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস করুন। নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে চেকআপ করুন।
ফিলিং কতদিন স্থায়ী হয়?
উপযুক্ত যত্ন নিলে কম্পোজিট ফিলিং ৫-১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এরপর প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে।
ফিলিং করার খরচ কত?
ফিলিং এর খরচ ফিলিং এর ধরন, দাঁতের অবস্থান এবং ক্লিনিক ভেদে ভিন্ন হয়। আমাদের ক্লিনিকে ফিলিং চিকিৎসার খরচ: ৯৯০৳।
জি.আই ফিলিং কি?
জি.আই ফিলিং বা গ্লাস আইনোমার ফিলিং হল এক ধরনের ফিলিং যা ফ্লোরাইড মুক্ত করে যা দাঁতকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়। এটি সাধারণত শিশুদের দাঁত এবং প্রাপ্তবয়স্কদের অস্থায়ী ফিলিং হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ফিলিং চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর:
ফিলিং করতে কত সময় লাগে?
একটি দাঁতের ফিলিং করতে সাধারণত ২০-৩০ মিনিট সময় লাগে।
ফিলিং করতে ব্যথা হয় ?
আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ফিলিং চিকিৎসা সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত। প্রয়োজনে লোকাল অ্যানেসথেশিয়া দেওয়া হয়।
ফিলিং করার পর কি খাওয়া যাবে?
ফিলিং করার পর ২ ঘন্টা পর্যন্ত কিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকুন। তারপর নরম খাবার খান এবং ২৪ ঘন্টা কড়া, আঠালো বা রঙ্গিন খাবার এড়িয়ে চলুন।
ফিলিং করার পর দাঁত সংবেদনশীল হয় ?
ফিলিং করার পর কিছুদিন দাঁত সংবেদনশীল হওয়া স্বাভাবিক। এটি সাধারণত কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।